Archive for the ‘কেতকী কুশারী ডাইসন (১৯৪০ – )’ Category

>…

যন্ত্রের তার নিংড়ে শিল্পী বার করেন ঝংকার,
আমাদের মনে হয় আমাদেরই ব্যথা ওখানে বাজছে |

অবাক আমরা ভাবি,
আমাদের না জেনেও তিনি কেমন ক’রে জেনে গেলেন
আমাদের নিভৃত অনুভবকে |

ধ্বনি রূপ দেয় ব্যথাকে,
সেই ব্যথা নিবিড়,
কিন্তু তার চেয়োও নিবিড়
নীরব তারের ব্যথা—

যাকে শিল্পীর আঙুল একদিন বাজাতো
কিন্তু এখন আর বাজায় না |

ধুলো জমে | কেবল সেই ধুলোই
তার ব্যথার সাক্ষী |

>…

( মৌসুমী ভৌমিক এর গান শুনে লেখা কবিতা )

১.
তুমি সেই সোনালী ডানার চিল
যাকে দেখেছিলেন একলা কবি
ধানসিড়ি নদীর উপরে
দুপুরের মেঘলা আকাশে |

বেতের ফল কখনও দেখেছি ব’লে
মনে পড়া না,
তবু কল্পনা ক’রে নিতে পারি
তোমার দৃষ্টির মতোই

বন্য তার ত্বকের স্নিগ্ধতা—
কোথাও সামিপ্য আছে কোনো |
তোমার গানের গায়ে
সূক্ষ্ম উত্তরীয়ের মতো উড়ছে

দুই ডানার আলিঙ্গনের মধ্যে
আকাশকে পেয়েও না-পাওয়ার কান্না |
রাঙা রাজকন্যা নও, শামলা গৃহস্থকন্যা,
কিন্তু যেখানে তুমি অনন্যা

সে তোমার সেই ক্ষমতায় নয়
যার জোরে তুমি পুরুষ কবির ভাষায়
রাঙা রাজকন্যার মতো ভর করতে পারো—
না-হয় সে-কাজ তুমি পারোই—

তোমার ভিন্নতা তোমার সৃষ্টার উড়ানে,
যেখানে তোমার খেলা
দৃরকে ছুঁয়েও দূরতরের বিরহে উত্কণ্ঠিত |
ভয় পেও না, বিহঙ্গী,

এই তো মাত্র ক’টা দিনের ঘুরপাক—
কে জানে হঠাৎই কখন
তোমার দিকে তাক করবে
সেই ধুরন্ধর তীরন্দাজ

যার ল্ক্ষ্য অব্যর্থ | ওড়ো,
যেভাবে পারো উঠে পড়ো
নিঃসোপান নীলের মাচানে |
তোমার আকাশ হোক অবারিত |

২.
অনেক দূর থেকে দূরবীনে এসে ঠেকছে
আলোর সেই ঘুড়ি, লাটাই থেকে যাকে ছাড়া হয়েছিলো
এই সৃষ্টির ব্রাহ্মমুহূর্তে |

এই পাওয়া — এও সৃষ্টি | মহাশূণ্যে দূরবীন উঁচিয়ে
আমরা এইমাত্র তাকে সৃষ্টি করলাম |
ঘরে আনলাম ঘরের মেয়েকে |

তারও ওপারে নাকি আছে
ভিন্ন বিশ্ব, বিজ্ঞানীদের মতে—
যোখানে আমাদের দ্রব্যনিয়ম খাটে না,

যেখানে নাও থাকতে পারে
তমোজ্যোতির উচাটন দ্বান্দ্বিকতা |
আপাততঃ, চিল-মেয়ে, সোনা-সুতো,

অসীমের বিধূনিত সীমা,
আমি কৃতজ্ঞ যে তুমি এই পারেরই দুহিতা,
এই জঙ্গলেরই প্রজাপতি |

নয়তো চেনা হতো না |