Archive for the ‘বিশ্বজিৎ চৌধুরী (১৯৬০ – )’ Category

>…

বাহ, তোমাদের ফিগার তো ভালো !
হেঁটে আসছো, ভেসে আসছো, দুলে উঠছো
বিপজ্জনক সব বাঁক থেকে ঠিকরে পড়ছে আলো।

বেশ তো ভ্রূ-তীর জানো মেয়ে, বিদ্যুতে দুফালি হয় মেঘ
এই তথ্য কখন জেনেছো ? ভালো,
জেনেছো বলেই না আজ রাতে বজ্রপাতের আগে
নিঃশব্দে আগুন চমকালো।
সুরের মূর্ছনা থেকে আছড়ে পড়ছে ঢেউ
ঢেউ মানে সমুদ্র-আবহ
খুবই অর্থবহ এই জল, স্রোত ভেঙে ছুটে আসছে কেউ
                                     জেগে ওঠা নগ্ন জলপরী ?
দেখো দেখো, ধসে পড়ছে সমুদ্র-সংলগ্ন বালিয়াড়ি।

খুব তো দেখালে বাহু, স্তনগুচ্ছ, নিতম্ব বা নাভি
পায়ের গোড়ালি থেকে ছন্দময় মরালির গ্রীবা
ভালো; তবে আর কিছু নেই ? এই ধরো মন-টন
          অনুভূতি, রক্ত, প্রেম, ক্রোধ বা দহন ?
শরীরের নিচে সব আছে তো ঠিকঠাক ?

সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, ওইসব দেখাবে কখন ?

>…

কৃষ্ণপক্ষের খুব গাঢ় কোন রাতে, আফ্রিকার
কোন এক কৃষ্ণাঙ্গ রমণী, মনে কর অজ্ঞাত কারণে
সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে হেঁটে গেল ঘরে উঠোনে
তারপর ত্রস্ত পায়ে উঠোন পেরিয়ে, দূরপথে
ছুটে যাচ্ছে ছেনালির ঢঙে।

ভাবো সেই অনাবৃত দেহ, পায়ের গোড়ালি থেকে
ছন্দ লতিয়ে ওঠে নিতম্ব, কোমর আর গ্রীবার কিনারে
সেই মেয়ে; নিঃশ্বাস নাকের কাছে, দেহে আছে তরল প্রবাহ
অনায়াসে ছুটে যাচ্ছে অজানার টানে
না-কি সে জানে, তার গন্তব্য কোথায় ?

এইবার মেয়েটির কাছে এসো, হাঁটো পাশে পাশে
কান পাতো- শুনতে পাচ্ছো তার গোঙানির গান ?

মেয়েটি কাঁদছে কেন ?

আফ্রিকার মেয়েরা কি বাঙালি নদীর ভাষা জানে ?

>…

গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম , কাজ ছিল না কোনো
হলদেটে এক পাখি আমায় ডাক দিল এই শোনো।
ভয়ে আমার বুকের ভেতর ধড়াস করে ওঠে
মানুষ যেমন কথা বলে , পাখির মুখেও ফুটে !
আবার আমায় চমকে দিয়ে কইলো কথা পাখি
তুমিও যেমন একলা থাকো আমিও তেমন থাকি।
অবাক হলাম হলদে পাখি সব কথা সে জানেই
মিষ্টি করে বললো আমায় তোমার বুঝি মা নেই ?

মার কথাতে আমার হঠাৎ ঝাপসা হলো দিষ্টি
বলি , তুমি কে গো এমন কইছো কথা মিষ্টি ?
বললো পাখি , আমিই জানি দুঃখ তোমার কি
তোমার মতন ছোট্ট বেলায় মা হারিয়েছি।
তোমার মতো মা নেই যাদের হারিয়ে গেছে দূরে
তাদের আমি আপন করি মিষ্টি গানের সুরে।