Archive for the ‘ড.নীলরতন সেন (১৯২৫ – ২০০০)’ Category

>…

কাল রাতে
স্বপ্নের সাঁকো পেরিয়ে
অনেক দুরের সেই সবুজ দেশে
আমি তখন অলস পায়ে হাঁটছিলাম।
ঠিক সেই কুল গাছটির তলাতেই দেখা হয়ে গেল।

কি আশ্চর্য!
গাছটা তেমনি দাঁড়িয়ে আছে,
অকাল বর্ষণ স্নাতা
ভিজে মাটি আর সোনালী রোদে
ঝিল্ মিল্ সবুজ পাতার হাতছানিতে
স্বাগত জানালো।

কি আশ্চর্য!
তুমি তিরিশ বছরের ওপারে
(এখনো হাসিতে গালে টোল খায়)
চোখে কৌতুক হেনে
বড়ো বড়ো সবুজ ঘাসের মধ্যে
হাঁটু ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছ
আমার অপেক্ষায়।

দুটি অকালের কুল ঝরে পড়লো।
কাড়াকাড়ি করে দুজনাতে কুড়িয়ে খেলাম।
তেমনি স্বাদের আশ্চর্য টক-মিষ্টি।

তুমি হাসলে মুক্তো ঝরা হাসি,
গোলাপী গাল রাঙা হয়ে উঠল।
স্বপ্নের সাঁকো পেরিয়ে
অনে দূরের পথে হাঁটতে হাঁটতে,
কাল কেমন আচমকা তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল।

>…

টলটলে উদ্ধত মেঘ
পুব-দখিনে সাগরে-আকাশে মেশামেশি।
নিশ্চয়ই বর্ষার ঢল নেমেছে.–
গাঢ় নীল শান্ত সমুদ্র
দেখ কেমন চিড়বিড়িয়ে উঠছে।
হাওয়ার ঝাপটায় বৃষ্টির আমেজ।
না, –আর বাইরে থেকোনা।
শার্শির কাঁচটা নামিয়ে দাও,
ঘরে এসো।
ছোট্ট কেবিনে বেশ হাত-পা গুটিয়ে
ঘন হয়ে বোসো।

“মাগো, কি ছোট্ট ঘর দেখেছ ?
একটু হাত-পা ছড়ানোরও জায়গা নেই।”

নেইতো বেশ হয়েছে।
শার্শিতে বৃষ্টির চাবুক,
খোলা ডেক্-এ হাওয়ার উদ্দাম দাপাদাপি।
দেখ মুহুর্তে সব শান্ত হয়ে গেল !
দেখ দিগন্ত ছোঁয়া সমুদ্র
চারদিক থেকে কেমন নিজেকে ণ্ডটিয়ে আনল।
আলতো সোহাগের আলিঙ্গনে
তোমাদের খেলনা তরী
এখন খুশিতে কি ডগমগ !
সারাদিনের অস্থির দোলানি এবার শান্ত।

স্নিগ্ধ বাদলের স্পর্শ গায়ে মেখে
মন্থর আবেশে
গরবিনী কেমন জল কেটে
এগিয়ে চলেছে।

কাছে এসে বোসো।
সমুদ্রটা এত বড়ো কেন ?
কিছুতেই তোমাকে কাছে পাইনি এতক্ষণ।
বৃষ্টির আদরে এবার দূরত্ব ঘুচলো
মেঘে সাগরে মাখামাখি !
খেলনা তরী সোহাগে গরবিনী !
ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
শুনছ,
কাছে এসো।
আরও কাছে এসে বোসো।